যশোর প্রতিনিধি: যশোরের কেশবপুরে ভ্যান চালক ইদ্রিস (১৪) হত্যা মামলায় ৬ জনকে গ্রেফতার এবং হত্যা মামলার ভ্যানসহ চোরাই ৫ ভ্যান ও সরঞ্জামাদি উদ্ধার করেছে,জেলা গোয়েন্দা। তদন্তে মিলেছে ভ্যান চুরির ঘটনার মুল তথ্য।

মূলত ভ্যান ছিনতাইয়ের উদ্দেশ্যে ভ্যান চালক ইদ্রিস আলীকে ভাড়া করে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে ঘটনাস্থলে নিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করে লাশ গুম করে ও ব্যবহৃত ভ্যান গাড়িটি নিয়ে চলে যায় ভ্যান চোর চক্রটির সসস্যরা ।

গত ১ জানুয়ারি সকালে যশোর কেশবপুর থানার মঙ্গলকোট থেকে ইদ্রিস আলী (১৪) নামের এক ব্যাটারী চালিত ভ্যান চালকের লাশ উদ্ধার করে কেশবপুর থানা পুলিশ। আগেরদিন সকালে ভ্যান নিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি না ফেরায় সারা রাত বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুজিতেও সন্ধান না মিললে বছরের প্রথম দিনে মঙ্গলকোট থেকে তার মৃত দেহ পাওয়া যায়। পরে এই সংক্রান্তে কেশবপুর ধানাধীন শ্রিফলা গ্রামের সাহাবুদ্দিনের ছেলে (নিহত ইদ্রিস আলীর বড় ভাই) আঃ কুদ্দুছ বাদী হয়ে এজাহার দায়ের করলে কেশবপুর থানার মামলা নং-০২ তাং-০১/০১/২০২১ ইং ধারা-৩০২/৩৯৪/২০১/৩৪ পেনাল কোড রুজু হয়।

ঘটনার রহস্য উদঘাটনে থানা পুলিশ ও ডিবি পুলিশের একাধিক টিম গোপন ও প্রকাশ্যে তদন্ত শুরু করে। ঘটনাটি চাঞ্চল্যকর হওয়ায় মামলাটি ২৭ জানুয়ারি জেলা গোয়েন্দা শাখার উপর তদন্তভার ন্যাস্ত করেন জেলার পুলিশ সুপার।

৫ মার্চ ২০২১ তারিখে মনিরামপুর থানাধীন কাশিমনগর সাকিনে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে চোরাই ভ্যান ক্রয় ও বিক্রয়ের সময় ১ জনকে চোরাই ভ্যান ও সরঞ্জামসহ হাতে নাতে আটক করেন। এই সংক্রান্তে মনিরামপুর থানায় পৃথক একটি মামলা রুজু হয়।

উক্ত ঘটনায় পলাতক মনিরামপুরের সোহেল রানা ও কেশবপুরের নাজমুল ইসলাম ইমরান নামের ভ্যান চোরের সন্ধ্যানে নামে ডিবি পুলিশ। একপর্যায়ে গত কাল ১৭ ই মার্চ দুপুরে চাঁচড়া চেকপোষ্ট এলাকা থেকে প্রধান চোর নাজমুল ইসলাম, ইমরান, সোহেলসহ ০৩ জনকে এবং তাদের স্বীকারোক্তি মতে কোতয়ালী থানাধীন ঘোপ বেলতলা ডিআইজি রোড থেকে আবতাবকে আটক করে তার হেফাজত থেকে চোরাই ভ্যান ও সরঞ্জাম উদ্ধার করে পুলিশ।

সংবাদ পেয়ে কেশবপুর ইদ্রিস হত্যা মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক কাজী মাসুম ও পুলিশ পরিদর্শক রুপন কুমার সরকার, পিপিএম ঘটনাস্থলে পৌছে তাদেরকে জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে কেশবপুরের ইদ্রিস হত্যার ঘটনাসহ একাধিক ভ্যান চুরির ঘটনা স্বীকার করে ইমরান-সোহেল চোরচক্র। তাদের স্বীকারোক্তি মতে ধারাবাহিক অভিযানে মনিরামপুর তাহেরপুর থেকে রশিদ নামের আরেকজনকে আটক করে কেশবপুর থানাধীন বাজিতপুর সাকিনে হত্যা মামলার ছিনতাইকৃত ব্যাটারী চালিত ভ্যান গাড়িটি উদ্ধার করে ডিবি পুলিশ।

চোর নাজমুল ইসলাম ইমরান হত্যা মামলার ঘটনাস্থলে গিয়ে হত্যা ও ছিনতাইয়ের আধ্যুপান্ত বর্ননা দেয় এছাড়া কেশবপুর থানাধীন ছোট পাথরা, পাজিয়া ও হদ গ্রামে ঘটনার আগে ও পরে একাধিক ভ্যান চুরির ঘটনা বর্ননা দেয় এবং ভুক্তভোগীদের বাড়ী সনাক্ত মহোড়া করে ডিবি পুলিশ। তাদের স্বীকারোক্তি মতে মনিরামপুর কাশিপুর বাজারে রফিকুল ইসলামের অটো রিক্সা গ্যারেজ হতে ২টি চোরাই ব্যাটারী চালিত ভ্যান ও সরঞ্জামাদি উদ্ধারসহ রফিকুল ইসলামকে আটক করে ডিবি পুলিশ।

মোট ০৬ জনকে আটক করে হত্যা মামলার ছিনতাইকৃত ব্যাটারী চালিত ভ্যান গাড়ীসহ মোট ০৫টি ভ্যান ও সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়। চোরাই উদ্ধার সংক্রান্তে এসআই মফিজুল ইসলাম,পিপিএম বাদী হয়ে কোতয়ালী মডেল থানায় এজাহার দায়ের করলে পৃখক মামলা রুজু হয় এবং কেশবপুরের ভ্যান চালক ইদ্রিস হত্যা মামলাতেও গ্রেফতার করে তাদেরকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হবে।